খালেদা জিয়া হার্ট অ্যাটাক করেছেন

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদায় জিয়া মধ্যরাতে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর ঢাকার একটি হাসপাতালে তার এনজিওগ্রাম করা হয়।

চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবীর খান জানান খালেদা জিয়ার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এবং এরপর দ্রুত তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

“শুক্রবার সকাল থেকেই অসুস্থ বোধ করছিলেন চেয়ারপার্সন। রাতে হার্ট অ্যাটাকের পর সেখানে থাকা চিকিৎসকরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান,” বলছিলেন মিস্টার খান।

প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়া বাসাতে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানেই ছিলেন।

শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে আড়াই মাস হাসপাতালে থাকার পর ফেব্রুয়ারির শুরুতে গুলশানের বাসায় ফিরেছিলেন খালেদা জিয়া।

শুক্রবার মধ্যরাতে যখন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেই সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের অন্যান্য নেতারা।

হাসপাতাল থেকে বের হয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ”ডাক্তাররা ইতোমধ্যে যে পরীক্ষানিরীক্ষা করেছেন, তার মধ্য দিয়ে দেখা গেছে যে, আগের দিন বিকাল থেকেই তার হার্টে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে।”

”উনি তো একটু চাপা মানুষ, কাউকে বলেননি। পরে ডাক্তাররা যখন আজকে চেক করতে গেছেন, ডাক্তার জাহিদ এবং সিদ্দিক সাহেব দেখেছেন যে, তার প্রব্লেম হয়েছে। তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে তাকে তাড়াতাড়ি (হাসপাতালে) নিয়ে আসা হবে।”

এখন খালেদা জিয়া স্টেবল আছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম।

”এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করার পরে, বিশেষ করে এনজিওগ্রাম করার পরে বোঝা যাবে যে, তার সমস্যা কতটা জটিল,” বলছেন মি. মির্জা ফখরুল ইসলাম। এ নিয়ে গত দুই বছরে চতুর্থবারের মতো হাসপাতালে ভর্তি হলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।

ছিয়াত্তর বছর বয়সী খালেদা জিয়া এর পাশাপাশি ডায়াবেটিস,আর্থ্রাইটিস, ফুসফুস, কিডনি, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন অনেকদিন ধরে।

টানা দুইমাস ২১ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর এই বছরের পহেলা ফেব্রুয়ারি গুলশানের বাসায় ফিরেছিলেন খালেদা জিয়া।

গত বছরের তেরই নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এরপর তার শরীরে কয়েক দফায় অস্ত্রোপচার করা হয়।

গত বছরের ২৮শে নভেম্বর চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছেন।

বিদেশে তার উন্নত চিকিৎসার দাবীতে নানা কর্মসূচী পালন করেছে বিএনপি। সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার পরিবার থেকেও আবেদন করা হয়েছে।

তবে আইনে সেই সুযোগ নেই বলে সরকার জানিয়েছে। দুই হাজার আঠারো সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সেই দিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।পরবর্তীতে সেই সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে হাইকোর্ট।

পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাতেও তাকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

সরকার প্রধানের নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ শর্ত সাপেক্ষে দণ্ড স্থগিত করে তাকে ছয় মাসের জন্য সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়া হয়।

এরপর কয়েক দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *