|| জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ||
দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে বিশিষ্ট গ্যাস্ট্রোএন্টারোলিজিস্ট ও সমাজ কর্মী ডক্টর রবার্ট রেমার পরিবার ও সমর্থকরা জানিয়েছেন যে, তিনি মৃত্যুর হুমকি ও চাঁদাবাজীর শিকার হয়ে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বর্তমান অজ্ঞাত অবস্থান থেকে তাকে ফিরতে বাধ্য করা হলে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে জানানো হচ্ছে, সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীলীগের একজন পরিচিত সমর্থক এবং গারো খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হওয়ায় ডক্টর রেমারকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি এই পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া এক জন উর্ধ্বতন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক থাকার কারণে তিনি প্রতিহিংসার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তার পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ডক্টর রেমার উপর ধারাবাহিক হয়রানি শুরু হয়। তারা অভিযোগ করেছেন তাকে সরাসরি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত্যুর হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজীর চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশকে না জানানোর জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
পরিবার আরও জানায়, তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তাকে বাংলাদেশে বসবাস করতে দেয়া হবে না। এমন হুমকির মুখে তিনি আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে। দেশের এক ব্যাপক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে। দ্য ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে অন্তবর্তিকালীন সরকার আওয়ামীলীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে এবং দলের বহু প্রক্তন কর্মী-সমর্থক ও তাদের আত্মীয়দের নজরদারিতে রেখেছে।
সমালোচকদের মতে, এই পদক্ষেপে সাবেক ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। ডক্টর রেমায় সংকট আরো ঘনীভূত হয়েছে। কারণ তিনি একই সঙ্গে খ্রিষ্টান এবং গারো আদিবাসী সম্প্রদায়ের সদস্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো আগস্ট পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতাসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী জাতিসংঘ নির্যাতনের বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
বিভিন্ন এলাকায় সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির পরিচালনার জন্য পরিচিত ডক্টর রেমার। সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা বলেছেন, তার ঘটনাটি একটি বৃহত্তর ও উদ্বেগজনক ধারার প্রতিক। তাদের মতে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সমর্থক এমনকি সিনিয়র নেতাদের পরিবারের সদস্যদেরও পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে একজন সমর্থক লিখেছেন এই বিষয়টি শুধু একজন ডাক্তারের সুরক্ষার প্রশ্ন নয়, বরং রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিরোধী মতাদর্শের মানুষ এবং সংখ্যালঘুদের যে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে পরতে হচ্ছে। এটি তারই প্রতিচ্ছবি। তারা ডক্টর রেমার সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।




















