বাল্টিমোর ব্রিজের ধ্বংসাবশেষ সরানোর ‘কঠিন অভিযানে’ তিনটি ভাসমান ক্রেন

বাল্টিমোর ব্রিজের ধ্বংসাবশেষ অপসারণে ভাসমান তিনটি ভারী উত্তোলন ক্রেন শুক্রবার বাল্টিমোর বন্দরে এসে পৌঁছেছে।
মেরিল্যান্ডের গভর্নর এটিকে একটি ‘উল্লেখযোগ্য জটিল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, বিধ্বস্ত ব্রিজ থেকে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া গার্ডারগুলো কন্টেইনার জাহাজে করে সরিয়ে নেয়া হবে। মেরিল্যান্ডের গভর্নর ওয়েস মুর একটি নৌকায় করে বিপর্যয়কর দৃশ্য পরিদর্শন করার পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এটি কাছে থেকে দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন যে, এটি কতটা কঠিন কাজ।’ অভিবাসী গোষ্ঠীগুলো ইতোমধ্যে ছয় লাতিনো নির্মাণ শ্রমিককে সম্মানিত করেছে যারা প্রাণ হারিয়েছিল যখন ডালি কনটেইনার জাহাজটি মঙ্গলবার ভোরের অনেক আগে ‘ফ্রান্সিস স্কট কী সেতুতে’ আঘাত করেছিল। তখন ৬ শ্রমিকের একটি দল সেখানে গর্ত মেরামত করছিল।
বাল্টিমোরে বসবাসকারী হন্ডুরাসের একজন নির্মাণ শ্রমিক এরিকা আলেমান বলেছেন, ‘আমি এখানে বলতে এসেছি যে, আমরা অভিবাসীরা অপরিহার্য।’
বাল্টিমোরের ব্যস্ত বন্দরের মাধ্যমে জাহাজ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে, যার ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে ব্যাঘাত ঘটছে এবং মুর সতর্ক করেছেন যে, পুনরুদ্ধার দীর্ঘ হবে। ‘এ কাজটিতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে’ এ কথা উল্লেখ করে মুর বলেন, ‘আমরা ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার না করা পর্যন্ত সেতুটি পুনঃনির্মাণ করতে পারি না।’ পুনরুদ্ধারের জটিলতা জড়িতদের হতাশ করেছে। ইউএস কোস্ট গার্ড রিয়ার অ্যাডমিরাল শ্যানন গিলরেথ বলেছেন, ‘সেই সেতুটিকে সঠিক আকারের টুকরোগুলোতে ভেঙে দিতে সক্ষম হতে আমাদের সঠিক পরিকল্পনা বের করতে হবে।’
হাজার হাজার টন ওজনের বাকানো পেচানো ব্রিজটি এখনও ক্ষতিগ্রস্ত কনটেইনার জাহাজটিকে আটকে রেখেছে।
একটি ১ হাজার টন লিফ্ট ক্ষমতার ডেরিক বার্জ চেসাপিক এবং দ’ুটি ছোট ক্রেন বার্জ বাল্টিমোর বন্দরে পৌঁছেছে। নৌবাহিনী জানিয়েছে, চতুর্থ একটি ক্রেন বার্জ আগামী সপ্তাহে আসবে চার শ্রমিকের মৃতদেহ এখনও উদ্ধার না হওয়ায় পাতাপস্কো নদীর গভীর পানি থেকে টন টন স্টিলের ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করার কাজটি আরও জটিল করে তুলেছে। সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী ১ হাজার ফুট (৩০০-মিটার) ডালি ক্ষমতা হারিয়ে সেতুর সাপোর্ট কলামে পড়ে যাওয়ার সময় ৪ নিখোঁজ শ্রমিক নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফেডারেল প্রশাসন ক্লিনআপ এবং পুনরুদ্ধার অপারেশনের জন্য জরুরি তহবিলে ৬০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন করেছে, যেখানে একটি নতুন সেতু নির্মাণের খরচ শেষ পর্যন্ত ১ বিলিয়ন হতে পারে।
অপারেশনটি সম্ভবত তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে: বন্দরে এবং বন্দরের বাইরে একমুখী যান চলাচলের জন্য সেতু থেকে ট্রাসগুলো সরানো হবে; জাহাজে সেতুর অংশগুলোকে উত্তোলন করা হবে যাতে জাহাজটি সরানো যায়; এবং তারপর নদীর তল থেকে ইস্পাত এবং কংক্রিটের ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করা হবে।
প্রকল্পটিতে সম্ভবত কয়েক মাস সময় নেবে, যদিও একজন বিশ্লেষক ইউএস নেভাল ইনস্টিটিউটকে বলেছিলেন, চ্যানেলটি সীমিত ট্র্যাফিকের জন্য এক মাসের কম সময়ের মধ্যে পুনরায় চালু করা যেতে পারে। আর্মি কর্পস অফ ইঞ্জিনিয়ার্স, যা এই প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা বলেছে যে, এটি ১,১০০ টিরও বেশি প্রকৌশল, নির্মাণ, চুক্তি এবং অপারেশন বিশেষজ্ঞদের মোতায়েন করার জন্য একটি জরুরি পরিকল্পনা সক্রিয় করেছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *