কন্টেইনার ডিপোর ধ্বংসস্তূপ থেকে আরো দুটো দেহাবশেষ পাওয়া গেছে

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর ধ্বংসস্তূপ থেকে আরো দুটো মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ ও দমকল কর্মীরা এই খবর নিশ্চিত করলেও সরকারিভাবে নতুন মৃতদেহ উদ্ধারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও দেয়া হয়নি।  ডিপোর ভেতর থেকে আরও দুটি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, এদের একজন দমকল কর্মীর মৃতদেহ বলে তারা ধারণা করছেন।

 ভেতরে দুটি পুড়ে যাওয়া দেহাবশেষ পেয়েছেন তারা। তবে অতিমাত্রায় পুড়ে যাওয়ার কারণে ভালো বোঝা যাচ্ছে না।

এগুলোকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা হবে।

শনিবার রাতে শুরু হওয়া এ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪১ জন নিহত হবার খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে নয়জন দমকল বাহিনীর কর্মী রয়েছে। মঙ্গলবার পাওয়া মৃতদেহের মধ্যে দমকল বাহিনীর একজন থাকলে আরও দুইজন সদস্য এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

এদিকে ওই কন্টেইনার ডিপোর আগুন এখন প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে বলে বলছে সেনাবাহিনী।

সেখানে আর এখন ভয়ের কিছু নেই বলে তারা বলছেন।

এখন সেখানে তল্লাশি শুরু করেছে দমকল সার্ভিস ও সেনা সদস্যরা।

তবে এখনো পুরো এলাকাটি এখনো ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মঙ্গলবার সকালে একটি সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ডিপোর আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। কিছু কাপড়ের জিনিসপত্র থাকার কারণে ধোঁয়া বের হচ্ছে। কিন্তু এখন আর কোন ঝুঁকি আছে বলে মনে হচ্ছে না।

সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ টিম এসে পুরো জায়গাটি পরীক্ষা করে দেখবে যে, সেখানে আর কোনরকম ঝুঁকি আছে কিনা।

সোমবার দুপুরেই আগুন আয়ত্তে আনার তথ্য জানিয়েছিল দমকল বিভাগ। তবে সেই সময় বিভিন্ন স্থান থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গিয়েছিল।

দমকল বিভাগের সহকারী পরিচালক মোঃ আখতারুজ্জামান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”আগুন নেভানো হয়েছে। এখন আমরা তল্লাশি শুরু করেছি। আর কোন আগুনের সম্ভাবনা বা ঝুঁকি আছে কিনা, হতাহত আছে কিনা, ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, ইত্যাদি পরীক্ষা করে দেখা হবে। এরপর এই ডিপো নিরাপদ হয়েছে কিনা, তা বলা যাবে।”

ঘটনাস্থল থেকে সংবাদদাতা আকবর হোসেন জানাচ্ছেন, এখনো ডিপো থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এখনো যেহেতু কিছু কন্টেইনার থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যাচ্ছে, তাই সেগুলো পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা ডিপো এলাকাকে শতভাগ নিরাপদ বলতে চান না।

শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের ওই কন্টেইনার ডিপোর আগুনে অন্তত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন।

ওই ঘটনায় দুইশোর বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে নয় জন দমকল কর্মীও রয়েছে।

পঁচিশ একর জায়গার ওপর তৈরি করা বিএম কন্টেইনার ডিপোর এক থেকে দেড়শ কন্টেইনার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন দমকলের কর্মকর্তারা।

সেখানে কেমিক্যালের কিছু কন্টেইনার থাকলেও বাকিগুলোয় নানা ধরনের আমদানি-রপ্তানির পণ্য রয়েছে।

ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, যেখানে আগুন লেগেছিল, সেখানে ডিপোর শেড উড়ে গেছে।

ইতস্তত ছড়িয়ে রয়েছে পোড়া কন্টেইনার, গার্মেন্টস পণ্য, কেমিক্যালের জার ইত্যাদি।

শনিবার রাতের ওই আগুনের ঘটনায় অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছে

সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল কবির বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এই ঘটনায় একটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।

”এখনো আমার জায়গাটি ঘিরে রেখেছি। সেনা সদস্যরা ডিপোর ভেতরে কাজ করছে। জায়গা পুরোপুরি নিরাপদ ঘোষণা না করা পর্যন্ত সেখানে কাউকে যেতে দেয়া হবে না,” তিনি জানান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *